হোয়াইট শার্ক
-মাহীর শাহরিয়ার
সাল ২১৭৬, ২১ সেপ্টেম্বর,
সারা পৃথিবী জুড়ে রেড আলার্ট জারি করা হয়। দেখা দিয়েছে নতুন এক সমস্যা । সমস্যার কারণ এক অনলাইন
ভিত্তিক গেম , নাম হোয়াইট শার্ক । এটি এমন এক গেম যেখানে ব্যবহারকারী ডিপওয়েবে
ঢুকে যেকোন সময় লগইন করে খেলতে পারবেন । বর্তমানে গেমটি খেলেছে বা খেলছে এমন লোকের
সংখ্যা ৩.৬কোটি । সংখ্যাটি নেহাত কম নয় । এই গেমটি খেললে মানুষ হিপনোটাইজ হয়ে যায়
এবং ঠিক ১৩ দিন পর উদ্ভটভাবে আত্মহত্যা করে । বর্তমানে এই নিয়ে অনেক আলোচনা করছে
বিভিন্ন মহল । আন্তর্জাতিক গেমার্স অ্যাসোসিয়েশন আর প্রোগ্রামার্স কাউন্সিল মিলে
এক জরুরি মিটিং আয়োজন করেছে । মিটিং এ গেমটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয় । গেমার জুনাইদ
বললো , গেমটি প্রধানত ২০ বছরের কম বয়সি
ছেলেদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে , কিন্তু আশ্চার্যজনক ভাবে ২০ বছরের বেশি যারা খেলেছে
কেউ মারা যায় নি এবং কেউ যদি ১৩ দিনের আগে তাদের গেম থেকে ফিরিয়ে আনতে পারে তবে সে
মৃত্যু থেকে বেঁচে যাবে। এটি বলে কিছু ডকুমেন্টারি
দেখালো সে । এর সাম্ভাব্য কারণ জানতে সাথে সাথে এক কৃত্তিম বুদ্ধি সম্পন্ন রোবট
ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলে , ২০ বছরের বেশি বয়সের মানুষের মস্তিষ্ক সহজে
নিয়ন্ত্রন করা যায় না , এর জন্য বিশেষ পদ্ধতি লাগে যা এই গেমে এখনো নেই । সেই শুনে একজন
প্রোগ্রামার বললো কিন্তু এমন প্রোগ্রাম বানাতে বেশি দিন সময় লাগবে না তাদের । তাই
আমাদের তাড়াতাড়ি সমাধান বের করতে হবে । এক গেমার তখন বলে ওঠে , ২০১৭-১৮ এর দিকে
এমন এক গেম এসেছিল যা খেলে অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করে। সেটিও ছিল ডার্কওয়েবের এক
গেম । পরে ২০১৮ সালেই সেটি নিষ্ক্রিয় করা হয়
। আমাদেরও সেটি দেখে ধারণা আসবে এই গেমের প্রতিরোধক সম্পর্কে । তখন একদল
রোবট এ নিয়ে গবেষনা করতে শুরু করে । এবং ১ম দিনের মতো সেখানেই মিটিং শেষ হয় ।
সেই রাত থেকে বাঙ্গালি
প্রোগ্রামার , গুগলের সিইও এবং প্রোগ্রামার্স কাউন্সিলের হেড কোডার “শিবলী ইমতিয়াজ
হাসান” ,গবেষনা শুরু করেন ।
৩দিন গবেষনার পর তিনি ৮
টেরাবিটের এক গ্রোগ্রাম তৈরি করেন । এটি মিটিং এ দেখানো হলে সেটি নিয়ে আবার গবেষনা
করা হয় । কৃত্তিম বুদ্ধি সম্পন্ন একদল রোবট সেই সাইটের সোর্সকোড বের করে ও “শিবলী”-র
বানানো কোড প্রোয়োগ করে দেখে সেটি সফলভাবে সার্ভার ডাউন করে দেয় ,এবং সাথে কোড
আপলোডকারী কম্পিউটারের সকল তথ্য ধবংস করে দিয়ে পুরো কম্পিউটার নষ্ট করে ফেলে । এটি
দেখে সবাই আশ্চর্য হয়ে যায় । তখন শুরু হয়ে যায় হোয়াইট শার্কের বিরুদ্ধে গোপন মিশন
“অপারেশন থান্ডার স্ট্রিং” । হ্যাকাররা সাইটের এক্সেস নেয়ার চেষ্টা শুরু করে এবং ৩
ঘন্টা পর সফল হয় । এরপর তারা “শিবলি”-র বানানো কোড রান করায় এবং কিছুক্ষনের মধ্যে
সাইটের সাথে সংযুক্ত সকলের বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যায় ও তাদের সব রিসোর্স সহ
কম্পিউটার ধ্বংস হয়ে যায় । এর ফলে যাদের এখনো ১৩ দিন হয়নি তাদের বাঁচানো যায় ।সেই
সাথে ধরা পড়ে এই গেমের পেছনে থাকা মানুষরা । কিন্তু যাদের আজ ১৩তম দিন তাদের
একদিনের মধ্যে বাঁচাতে না পারলে আরো প্রায় ১৩ লক্ষ লোক মারা যাবে । তখন বেঁচে
যাওয়া লোকের উপর পর্যবেক্ষণ করে ডাক্তার ক্লার্ড এক যুগান্তকারী পদ্ধতি আবিষ্কার
করেন যার মাধ্যমে হিপনোটাইজেশনের প্রভাব নষ্ট করা যায়।বাংলাদেশি
বংশদ্ভুত প্রোগ্রামার সুবিন সেই পদ্ধতিকে কোডে রূপান্তর করেন আর স্যাটেলাইটের
মাধ্যমে সারা বিশ্বের উপর নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন । এর ফলে যারা আজ মারা
যাওয়ার কথা তারা বেচে যায় এবং যারা আক্রান্ত ছিলেন না তাদের উপর কোন প্রভাব পড়ে না
।
এভাবে একজন ডাক্তার এবং
দুজন প্রোগ্রামার মিলে রক্ষা করেন পৃথিবীর ৩.৭ কোটি মানুষকে ।
Comments
Post a Comment